শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১২ অপরাহ্ন
মাজেদুর রহমান- রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরোচীফঃ
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ মাজার পাড়ার মেহেদী হাসান নামের এক প্রাইভেট শিক্ষক কৌশলে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। গৃহবন্দী ভাবে প্রাইভেট শিক্ষক মেহেদী হাসানের নির্যাতনের শিকার তার স্ত্রী। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ করেন তার শ্বশুর। তার এমন অপকর্মের প্রতিবাদে ওই শিক্ষকের ছবিসহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকাজুড়ে অভিবাবকদের মাঝে উত্তেজনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। মেহেদী হাসান উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামের হাবিবুর রহমান(হবি) মন্ডলের ছেলে। গত রবিবার রাতে তার ছবিসহ পোস্টার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এলাকায় সাঁটানো হয়েছে।
নাজমুল হুদা নামের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন- মেহেদী হাসান কৌশলে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করছে। মানহানীর ভয়ে কোনো ছাত্রী বা তার পরিবার প্রতিবাদ করেছে না। সে সুযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক আরও ব্যাপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন- সম্প্রতি অভিযুক্ত শিক্ষক একজন ছাত্রী নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এরপর এক সপ্তাহ পর আবার বাড়ি ফিরে আসে। অপহৃত ছাত্রীর পরিবারটি গ্রামে মানসম্মান হারানোর আশঙ্কায় কোথাও কোনো অভিযোগ দেয়নি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিড়ালদহ কলেজের এক ছাত্রী বলেন- তিনি একজন চরিত্রহীন ব্যক্তি। তার কাছে প্রাইভেট পড়তে গেলে নানা প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলার চেষ্টা করেন। তার ফাঁদে যারা পড়েছে, তাদের সবার সর্বনাশ করেছে। আর এ কারণে ভুক্তভোগি পরিবারের লোকজনরা প্রতিবাদ স্বরুপ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানো হয়েছে।
এদিকে প্রাইভেট শিক্ষক মেহেদীর স্ত্রী এসব খবর জানতে পেরে স্বামীর কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলে মেহেদী তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন শুরু করে। এবং নিজ স্ত্রীকে দোষারোপ করে গৃহবন্দী করে রাখে ও তালাক দেওয়ার হুমকি দেয়। এমনকি মেহেদী তার শ্বশুরকে মোবাইলে কল করে তার বাড়িতে ডাকে এবং বলে আপনার মেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করিয়েছে, আপনি আসেন আমি আপনার মেয়েকে তালাক দিয়ে দিবো।
মেহেদীর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবন্দী স্ত্রী গতকাল রাতে (৯৯৯)-এ কল করে পুলিশের সাহায্য চাইলে পুঠিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়ার্দী হোসেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এবং গতকাল ২৭শে সেপ্টেম্বর মেহেদীর শ্বশুরকে থানায় ডাকেন, মেহেদীর শ্বশুর থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেনের নির্দেশে এসআই রেজাউল করিম ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ মেহেদীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে মেহেদীর গৃহবন্দী স্ত্রীকে উদ্ধার করে তার শ্বশুর এর হাতে তুলেদেন।
এ বিষয়ে প্রাইভেট শিক্ষক মেহেদী হাসান অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন- আমার কাছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী পড়তে আসে। আর এটা, অনেক প্রাইভেট শিক্ষকরা পছন্দ করেন না। যার কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই সাথে তারা রাতের আঁধারে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন পোস্টারিং এর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- লোক মারফত বিষয়টি জানার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছেন। তবে কোনো ছাত্রীকে অনৈতিক কাজ করেছে এমন অভিযোগ এখনো কেউ থানায় করেনি।